আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পর্নোগ্রাফি নির্মাণের অভিযোগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন বাংলাদেশি যুবক রাসেল সিকদার। চার বছর ধরে কলকাতার পার্শ্ববর্তী হুগলি জেলার ডানকুনি পৌরসভার মৃগালা মল্লিকপাড়ার একটি ফ্ল্যাটে তিনি পর্ন ভিডিও নির্মাণ করতেন। আরও চমকপ্রদ বিষয় হলো—সেসব ভিডিওতে নায়ক ছিলেন রাসেল নিজেই এবং “নায়িকা” হিসেবে অভিনয় করতে বাধ্য করা হতো তার সঙ্গে থাকা বাংলাদেশি তরুণীকে, যাকে তিনি স্ত্রীর পরিচয়ে রাখতেন।
কাকতালীয়ভাবে ফাঁস সবকিছু
ঘটনা প্রকাশ পায় একেবারেই অপ্রত্যাশিতভাবে। রাসেলের সঙ্গে থাকা তরুণী গোপনে পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে জানান—
-
রাসেল একজন বাংলাদেশি নাগরিক
-
কাজের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ভারতে নিয়ে আসে
-
ভারতে এসে জোরপূর্বক স্ত্রীর পরিচয় দিতে বাধ্য করে
-
নিয়মিত তাকে দিয়ে পর্ন ভিডিওতে অভিনয় করানো হতো
-
পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতনও চালাত রাসেল
তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে গত শনিবার নির্দিষ্ট ঠিকানায় অভিযান চালিয়ে রাসেল সিকদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়। জানা গেছে, কিছুদিন আগে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অসুস্থ হওয়ায় রাসেলের অসহায় অবস্থার সুযোগেই তরুণী সাহায্য চাইতে সক্ষম হন।
চার বছর ধরে পর্ন ব্যবসা পরিচালনা
পুলিশ নিশ্চিত করেছে—ডানকুনির ফ্ল্যাটটি রাসেল কিনেছিলেন এবং সেখানে স্বামী–স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করছিলেন। ফ্ল্যাটটিই ছিল পর্ন ভিডিও শুটিংয়ের আস্তানা। নির্মিত ভিডিও বিক্রি করা হতো বিভিন্ন পর্ন সাইটে। তরুণীর দাবি, জোরপূর্বক ও হুমকি দিয়ে এসব ভিডিওতে তাকে অভিনয় করানো হতো।
আদালতে হাজিরা, হেফাজত মঞ্জুর
সোমবার রাসেল সিকদার এবং উদ্ধার হওয়া তরুণীকে শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করা হয়। আদালত রাসেলকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তরুণীকে আপাতত একটি সেফ হোমে রাখা হয়েছে।
রাজনৈতিক বিতর্কে উত্তপ্ত স্থানীয় এলাকা
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ডানকুনি এলাকায় রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বিজেপি নেতা প্রকাশ পাল অভিযোগ করেন—
“ডানকুনিতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশে এলাকা ভরে গেছে। চার বছর ধরে বাংলাদেশি এক ব্যক্তি বসে বসে পর্ন ভিডিও বানাচ্ছে—স্থানীয় তৃণমূল নেতারা কিছুই জানলো না!”
অন্যদিকে স্থানীয় কাউন্সিলর জানিয়েছেন—তিনি এলাকায় কোনো বাংলাদেশি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে আছে, তা জানতেন না। ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।
বুড়িগঙ্গা.নিউজ