রাজধানীর মোহাম্মদপুরে লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার গৃহকর্মী আয়েশার স্বামী রবিউল ইসলাম চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তাঁর দাবি—চুরি করতে গিয়ে গৃহকর্ত্রীর হাতে ধরা পড়ায় আতঙ্কে আয়েশা মা–মেয়েকে হত্যা করেন।
বুধবার দুপুরে ঝালকাঠির নলছিটির কয়ারচর গ্রাম থেকে আয়েশা ও রবিউলকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে নয় সদস্যের একটি দল অভিযান চালায়।
গ্রেপ্তারের পর রবিউল বলেন, “সে কিছু জিনিস চুরি করে আমাকে দেবে ভাবছিল। গৃহকর্ত্রী পেছন থেকে ধরে ফেললে সে ভয় পেয়ে ছুরি দিয়ে কোপাতে শুরু করে। ধরে রাখার সময়টুকু সে আঘাতই করে গেছে। পরে মেয়ে আসলে তাকেও মেরে ফেলেছে।”
পুলিশ জানায়, ঘটনার চার দিন আগে আয়েশা শাহজাহান রোডের ১৪ তলা ভবনের সাততলায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেন। সোমবার সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে তিনি বোরকা পরে বাসায় প্রবেশ করেন এবং সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস ও মাস্ক পরে ভবন থেকে বেরিয়ে যান। সিসিটিভিতে তার এসব চলাফেরা স্পষ্ট দেখা যায়।
তদন্ত কর্মকর্তাদের ধারণা, গৃহকর্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর ঘটনাটি দেখে ফেলায় নাফিসাকেও একই অস্ত্রে হত্যা করা হয়। মাকে মৃত অবস্থায় দেখে নাফিসা ইন্টারকমে ফোন দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ওই সময়ই তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। ধস্তাধস্তির সময় ইন্টারকমের লাইনও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইচ–গিয়ার ছুরি এবং ফল কাটার ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ, যা দিয়ে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ঘটনার সময় নাফিসার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম—উত্তরার সানবীমস স্কুলের শিক্ষক—বাসায় ছিলেন না। সকাল সাতটার দিকে কাজে বের হয়ে তিনি সাড়ে ১১টায় ফিরে এসে স্ত্রী ও মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় পান। পরে তিনি গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামি করে মামলা করেন।
বুড়িগঙ্গা.নিউজ